শিরোনাম:
●   ক্ষমতার পিছনে জনসম্মতি না থাকলে তা ফ্যাসিবাদী হয়ে উঠতে পারে ●   রাঙামাটিতে আবু বক্কর সিদ্দিক এর বিরোদ্ধে সংবাদ সম্মেলন করেছে জনসাধারণ ●   প্রয়াত সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব এপোলো জামালীর প্রতি শ্রদ্ধা জ্ঞাপন ●   বিজয়ানন্দ থেরো’র ৪১তম জন্মদিন উদযাপন ●   দেশের নিরাপত্তার সাথে যুক্ত প্রধান সমুদ্র বন্দর বিদেশী কোম্পানির তত্বাবধানে দেয়ার তৎপরতা জাতীয় স্বার্থের পরিপন্থী ●   রাঙামাটিতে বুদ্ধাংকুর বৌদ্ধ বিহারে বুদ্ধ পূর্ণিমা উদযাপন ●   প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদের বিদেশ চলে যাওয়ার দায়দায়িত্ব অন্তর্বর্তী সরকারকেই বহন করতে হবে ●   গণঅভ্যুত্থানের অর্জন ধরে রাখতে যুবসমাজকে রাজপথে জেগে থাকতে হবে ●   ভারত - পাকিস্তানের মধ্যকার এই যুদ্ধ পরিস্থিতিতে কেউই বিজয়ী হবেনা ●   মৌলবাদীরা রাজু ভাস্কর্যের সামনে নারী প্রতিকৃতিতে জুতা মেরে বস্ত্র হরণ করে সমগ্র নারী সমাজকে অসম্মান করেছে : জুঁই চাকমা
ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ২২ মে ২০২৫, ৮ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২

জনগণতন্ত্র-jonogonotontro/The Peoples Democracy
বুধবার ● ২৫ আগস্ট ২০২১
প্রথম পাতা » উপ সম্পাদকীয় » মহামারীকালেও নারীর রক্ষা নেই ২৪ আগস্ট ইয়াসমিন দিবস
প্রথম পাতা » উপ সম্পাদকীয় » মহামারীকালেও নারীর রক্ষা নেই ২৪ আগস্ট ইয়াসমিন দিবস
৭৫৭ বার পঠিত
বুধবার ● ২৫ আগস্ট ২০২১
Decrease Font Size Increase Font Size Email this Article Print Friendly Version

মহামারীকালেও নারীর রক্ষা নেই ২৪ আগস্ট ইয়াসমিন দিবস

ছবি : সংবাদ সংক্রান্ত বহ্নিশিখা জামালী :: দিনটি আজ নারী নির্যাতন প্রতিরোধ দিবস হিসাবে পালন করা হচ্ছে।
১৯৯৫ সালে কিশোরী ইয়াসমিনকে দিনাজপুরে গণধর্ষণ করে মেরে ফেলা হয়েছিল। এর প্রতিবাদ-বিক্ষোভে দিনাজপুরে হাজার হাজার মানুষ রাস্তায় নেমে এসেছিল,শহর অচল হয়ে গিয়েছিল ; সৃষ্টি হয়েছিল গণবিষ্ফোরণ।সারাদেশ প্রতিবাদ - বিক্ষোভে ফেটে পড়েছিল।প্রশাসন ও সরকারকে আসামীদের গ্রেফতার ও বিচারে বাধ্য করা হয়। ২০০৪ সালে ধর্ষক ও হত্যাকারীদের সর্বোচ্চ শাস্তি কার্যকরি করা হয়।
আন্দোলনরত নারী সংগঠনসমূহ ২৪ আগস্টকে ইয়াসমিন দিবস হিসাবে ঘোষণা করে এই বিশেষ দিনটিকে ধর্ষণ ও নারী নিপীড়ন বিরোধী প্রতিরোধের প্রতীক হিসাবে ঘোষণা করে।
ইয়াসমিনের ধর্ষক ও খুনীদের বিচার হয়েছে সত্য; বিচার হয়েছে আরও কিছু ধর্ষক ও খুনীদের। কিন্তু এটা নির্মম সত্য যে অধিকাংশ ধর্ষক, নারী নিপীড়ক ও খুনিরা এখনও বিচারের বাইরে। আমাদের চারিপাশে, সমাজের নানা স্তরে তারা বুক ফুলিয়ে চলাফেরা করছে।নির্যাতীত ও ধর্ষিত অধিকাংশ পরিবার এদের মাস্তানী আর দৌরাত্মে চরম আতংকে দিন পার করছে।লাঞ্চিত নারীর বিচার পাওয়া দূরের কথা, নিজেদের জান বাচাঁতেই তারা আকুল, অস্থির।
নানা গবেষণা আর তথ্যে দেখা যায় ধর্ষিত আর নির্যাতিত বিপুল অধিকাংশ নারী আর মেয়ে শিশুরা গরীব পরিবারের সদস্য।এটার এক ধরনের শ্রেণীগত বৈশিষ্ট রয়েছে। সামাজিক ও অর্থনৈতিকভাবে এই শ্রেণীর পরিবারসমূহ সবচেয়ে দূর্বল ও পিছিয়ে থাকার কারণে তাদের পরিবারের নারী ও নারী শিশুরা সবচেয়ে ঝুঁকির মধ্যে থাকে। এ কারণে অধিকাংশ ক্ষেত্রে তাদের পক্ষে ধর্ষণ ও নিপীড়নের বিচারের দাবি নিয়ে থানা,পুলিশ আর আইন - আদালতে যাওয়া সম্ভব হয় না।কুমিল্লায় ক্যান্টনমেন্ট অঞ্চলে ধর্ষিত ও নিহত তনুর বাবা মেয়ের ধর্ষণ ও হত্যার বিচার না পাওয়ার ক্ষোভে গণমাধ্যমের সামনে চিৎকার করে বলেছিলেন “গরীব বলে কি স্বাধীন দেশে আমি আমার মেয়ের হত্যার বিচার পাব না”।তনুর বাবার এই প্রশ্নের উত্তর কেউ দিতে পারেনি।যারা এই প্রশ্নের উত্তর দিতে পারতেন, ধর্ষক ও খুনীদের গ্রেফতার ও বিচারের আওতায় আনতে পারতেন তারাও আর বেশীদূর এগুতে পারেন নি।কারণ তাহলে থলের বিড়াল বেরিয়ে যেত।বোঝা গেছে ঐটুকু ঝুঁকি নেবার ক্ষমতাও তাদের নেই।যারা সকাল বিকাল বিচারহীনতার সংস্কৃতি থেকে বেরিয়ে আসার বক্তৃতা করেন তারা তাদের চেহারা ও মুরোদও প্রতিদিন দেখিয়ে দিচ্ছেন।
তনুর বাবার এই প্রশ্ন তো আসলে হাজার হাজার ভুক্তভোগী পরিবারের প্রশ্ন।তনুর বাবা মা ঠিকই বুঝে নিয়েছেন, কাগজে কলমে যাই লেখা থাকুক গরীব ও ক্ষমতাহীনদের জন্য আসলে কোন আইন নেই। আর তনুর বাবা মা’র মত হাজারো বাবা মা’র তো এটাও জানা যে অধিকাংশ ধর্ষক,নারী নিপীড়ক আর হত্যাকারীরা বিত্তবান, ক্ষমতাশালী; এরা অধিকাংশ থাকে প্রশাসন আর সরকারি দলের ছত্রছায়ায়। থানা,পুলিশ, আইন, আদালতে তো এদেরই প্রভাব বেশী। কার ঘাড়ে কটা মাথা যে এদের বিরুদ্ধে কথা বলে!
এ কারণেই অধিকাংশ ধর্ষক আর খুনীরা পার পেয়ে যায়।অনেক সময় টাকা দিয়ে রফা করা হয়।মামলা করার পরও অপরাধীদের গ্রেফতারে পুলিশী তৎপরতা দেখা যায় না।আত্মহত্যায় প্ররোচনাকারী ক্ষমতাবানকে গ্রেফতার বা ন্যূনতম জিজ্ঞাসাবাদও না করে পুলিশী রিপোর্ট দিয়ে হয় - ‘ আত্মহত্যাকারী নারীর সাথে অভিযুক্ত ব্যক্তির কোন সংশ্লিষ্টতা পাওয়া যায়নি’। এসব নিয়ে আমাদের গণমাধ্যম অনুসন্ধানী রিপোর্ট করারও সাহস রাখে না।কারণ অভিযুক্তদের ক্ষমতার হাত অনেক লম্বা।
আর এটা আমাদের সবারই জানা যে ধর্ষিত ও নির্যাতিত হবার পর থানা পুলিশ করলে অনেক ক্ষেত্রেই ভুক্তভোগী নারীর আবার কত ধরনের হেনস্তা ও পরোক্ষ ধর্ষণের শিকার হতে হয়।পুরুষতন্ত্র আর তার বিকার,বিকৃতি কতভাবেই না হাজির হয়।নায়িকা পরিমণি তার এক বড় উদাহরণ।
বিচারের আগেই তার বিচার হয়ে গেল! হয়ে গেল তার ক্যামেরা ট্রায়াল বা মিডিয়া ট্রায়াল। গুরুত্বপূর্ণ পেশাগত দায়িত্বে থাকা পুলিশ কর্মকর্তারা কতভাবেই তার চরিত্র হনন করলেন ? এই ঘোর অন্ধকারেও যে মিড়িয়ার পেশাদার দায়িত্বের উপর মানুষ এখনও ভরসা রাখতে চায় সেই মিডিয়া কর রংরুপ দিয়ে পরি মণিকে চিত্রিত করেছে ? কাদেরকে আপনারা আড়ালে রাখছেন, তাদেরকে রক্ষা করছেন! পরিমণির নানা পরশুদিন ঢাকায় কোর্ট এর বারান্দায় পরিমণির সাথে দেখা করে বলেছেন , দেশের আশিভাগ মানুষ জানে পরিমণির সাথে অন্যায় ও অবিচার করা হচ্ছে। তিনি কি বাডিয়ে কিছু বলেছেন ? মনে হয় না।কেন তাকে তিন তিন বার রিম্যান্ডে নিতে হবে , কেন তাকে জামিন দেয়া হবে না; এর কি কোন সদুত্তর আছে? মনে হয় না।ঢাকা শহরে কতজন মাদক ব্যবসায়ী, মাফিয়া, সন্ত্রাসী গডফাদারদের গ্রেফতার করা হয়েছে,অভিজাত এলাকার কটা অবৈধ মদের বার আপনারা বন্ধ করেছেন? নাগরিক হিসাবে এসব প্রশ্ন করলে আপনারা কি বিব্রতবোধ করবেন ?
করোনার এইদ দূর্যোগকালেও নারীর উপর সহিংসতা, নিপীড়ন, নিগ্রহ, ধর্ষণ বৃদ্ধি পেয়েছে। এই অতিমারীতেও লক্ষ লক্ষ নারী কর্মহীন হয়েছেন,চরম দারিদ্র্য সীমার নীচে নেমেছেন। শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় করোনাকালে বাল্যবিবাহ বৃদ্ধি পেয়েছে। জীবন রক্ষায় অনাকাংখিত পেশাও বেছে নিতে হচ্ছে। মহামারীকালেও নারীর রক্ষা নেই,নেই ন্যুনতম সুরক্ষা।
নারী এমনিতেই শ্রেণী শোষণ আর পরিবার - সমাজের নানা ধরনের নিপীড়ন - নির্যাতনে চিড়ে - চেপটা,তার উপর যখন রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে পুরুষতন্ত্রের দৌরাত্বের অশ্লীল আর কুরুচিপূর্ণ আচরণ দেখতে হয় তখন মনে প্রশ্ন জাগে আমরা একবিংশ শতাব্দীতে মুক্তিযুদ্ধের বাংলাদেশে আছি?
এই ঘনঘোর অমাবস্যা কাটাতে হবে, অবসান ঘটাতে হবে নারীর উপর শ্রেণী ও পুরুষতান্ত্রিক যাবতীয় নির্যাতন - নিপীড়ন, ভেদ - বৈষম্য। কারণ নারীর মুক্তি না হলে সমাজেরও মুক্তি নেই।
ইয়াসমিন দিবসে এটাই হোক আমাদের দিশা।

লেখক : বহ্নিশিখা জামালী
নারী নেত্রী ও সম্পাদক কালের দাবি।





উপ সম্পাদকীয় এর আরও খবর

শান্তি চুক্তি পাহাড়ে বসবাসরত সকল জনগোষ্ঠীর অধিকার রক্ষায় সম্পূর্ণ ব্যর্থ শান্তি চুক্তি পাহাড়ে বসবাসরত সকল জনগোষ্ঠীর অধিকার রক্ষায় সম্পূর্ণ ব্যর্থ
পার্বত্য চুক্তির ২৬ বছরে পার্বত্য চট্টগ্রামের জনগণ কি-কি বৈষম্যের স্বীকার তা নিয়ে একটি পর্যালোচনা পার্বত্য চুক্তির ২৬ বছরে পার্বত্য চট্টগ্রামের জনগণ কি-কি বৈষম্যের স্বীকার তা নিয়ে একটি পর্যালোচনা
পার্বত্য অঞ্চলের ক্রীড়া উন্নয়নের নৈপথ্যের নায়ক নির্মল বড়ুয়া মিলন পার্বত্য অঞ্চলের ক্রীড়া উন্নয়নের নৈপথ্যের নায়ক নির্মল বড়ুয়া মিলন
সবকিছু কেড়ে নিয়েছে স্বৈরাচারী খুনি হাসিনার আওয়ামীলীগ সবকিছু কেড়ে নিয়েছে স্বৈরাচারী খুনি হাসিনার আওয়ামীলীগ
রাঙামাটিতে ঐক্যবদ্ধ বড়ুয়া সমাজ গড়ে তোলার সম্ভবনার পথ দেখা দিয়েছে রাঙামাটিতে ঐক্যবদ্ধ বড়ুয়া সমাজ গড়ে তোলার সম্ভবনার পথ দেখা দিয়েছে
আগামীতে  কারা দেশ চালাবে ? আগামীতে কারা দেশ চালাবে ?
মহান মে দিবস ও  শ্রমিকশ্রেণীর মুক্তির সংগ্রাম মহান মে দিবস ও শ্রমিকশ্রেণীর মুক্তির সংগ্রাম
সীমান্ত হত্যাকাণ্ড ও বাংলাদেশ - ভারত সম্পর্ক সীমান্ত হত্যাকাণ্ড ও বাংলাদেশ - ভারত সম্পর্ক
বিপন্ন সভ্যতায় বিপন্ন নারী বিপন্ন সভ্যতায় বিপন্ন নারী
গণতান্ত্রিক ও মানবিক সমঅধিকার  ছাড়া  নারীর মুক্তি নেই : বহ্নিশিখা জামালী গণতান্ত্রিক ও মানবিক সমঅধিকার ছাড়া নারীর মুক্তি নেই : বহ্নিশিখা জামালী

আর্কাইভ