শিরোনাম:
●   ক্ষমতার পিছনে জনসম্মতি না থাকলে তা ফ্যাসিবাদী হয়ে উঠতে পারে ●   রাঙামাটিতে আবু বক্কর সিদ্দিক এর বিরোদ্ধে সংবাদ সম্মেলন করেছে জনসাধারণ ●   প্রয়াত সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব এপোলো জামালীর প্রতি শ্রদ্ধা জ্ঞাপন ●   বিজয়ানন্দ থেরো’র ৪১তম জন্মদিন উদযাপন ●   দেশের নিরাপত্তার সাথে যুক্ত প্রধান সমুদ্র বন্দর বিদেশী কোম্পানির তত্বাবধানে দেয়ার তৎপরতা জাতীয় স্বার্থের পরিপন্থী ●   রাঙামাটিতে বুদ্ধাংকুর বৌদ্ধ বিহারে বুদ্ধ পূর্ণিমা উদযাপন ●   প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদের বিদেশ চলে যাওয়ার দায়দায়িত্ব অন্তর্বর্তী সরকারকেই বহন করতে হবে ●   গণঅভ্যুত্থানের অর্জন ধরে রাখতে যুবসমাজকে রাজপথে জেগে থাকতে হবে ●   ভারত - পাকিস্তানের মধ্যকার এই যুদ্ধ পরিস্থিতিতে কেউই বিজয়ী হবেনা ●   মৌলবাদীরা রাজু ভাস্কর্যের সামনে নারী প্রতিকৃতিতে জুতা মেরে বস্ত্র হরণ করে সমগ্র নারী সমাজকে অসম্মান করেছে : জুঁই চাকমা
ঢাকা, শুক্রবার, ২৩ মে ২০২৫, ৯ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২

জনগণতন্ত্র-jonogonotontro/The Peoples Democracy
বৃহস্পতিবার ● ৩ ডিসেম্বর ২০২০
প্রথম পাতা » উপ সম্পাদকীয় » গোলাম ইয়াজদানী খান মিনু ও তাঁর বিপ্লবী রাজনীতি
প্রথম পাতা » উপ সম্পাদকীয় » গোলাম ইয়াজদানী খান মিনু ও তাঁর বিপ্লবী রাজনীতি
৯০৫ বার পঠিত
বৃহস্পতিবার ● ৩ ডিসেম্বর ২০২০
Decrease Font Size Increase Font Size Email this Article Print Friendly Version

গোলাম ইয়াজদানী খান মিনু ও তাঁর বিপ্লবী রাজনীতি

ছবি : সংবাদ সংক্রান্তআবু হাসান টিপু :: ১৯৫৯ সালে কিউবা বিপ্লবের মহা নায়ক ফিদেল কাস্ত্রো বলেছিলেন ‘ আমি ৮২ জনকে নিয়ে বিপ্লব শুরু করি। তা যদি আমাকে আবার করতে হয়, তবে আমি ১০ বা ১৫ জনকে নিয়ে করব এবং স¤পূর্ণ বিশ্বাস নিয়ে করব। সংখ্যায় আপনি কত কম, সেটা কোনো বিষয় নয়, যদি আপনার বিশ্বাস ও কর্মপরিকল্পনা থাকে’। ফিদেল কাস্ত্রোর এ উক্তিটির সাথে চরমভাবে একমত ছিলেন গোলাম ইয়াজদানী খান মিনু, বিশ্বাস ও কর্মপরিকল্পনা থাকলে সংখ্যায় আপনি কত কম, সেটা যে কোনো বিষয় নয়; তিনি এই কঠিন সত্যের জীবন্ত উদাহরণ সৃষ্টি করেছিলেন ২০০৭ সালে নারায়ণগঞ্জে বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টিকে সুসংগঠিত করার দায়িত্ব গ্রহন করার মধ্যো দিয়ে।

প্রয়াত এই বামনেতা ১৯৬৫ সালে নারায়ণগঞ্জ হাই স্কুলের অষ্টম শ্রেণীর ছাত্র থাকাকালীন অবস্থায় পূর্ব পাকিস্তান ছাত্র ইউনিয়নের সাথে যুক্ত হন। কিছু দিন পর পূর্ব পাকিস্তান ছাত্র ইউনিয়ন বিভক্ত হলে তিনি ছাত্র ইউনিয়ন মেনন গ্রুপের সাথে যুক্ত থাকেন। ১৯৬৬ সালে পূর্ব পাকিস্তান কমিউনিস্ট পার্টি বিভক্ত হলে তিনি পার্টি কর্মী হিসেবে পিকিংপন্থী অংশে থাকেন। ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের প্রশ্নে পূর্ব পাকিস্তান কমিউনিস্ট পার্টি (এম এল) বিভক্ত হয়। সুখেন্দু দস্তিদার ও মোহাম্মদ তোয়াহা মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে থাকেন ও মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেন। অপর অংশ আব্দুল হকের নেতৃত্বে মুক্তিযুদ্ধ স¤পর্কে দুই কুকুরের কামড়াকামড়ি বলে পাকিস্তানের ঐক্য রক্ষার আহ্বান জানান। কমরেড মিনু ছিলেন সুখেন্দু দস্তিদার ও মোহাম্মদ তোয়াহার পক্ষে।

মুক্তিযুদ্ধের পর সুখেন্দু দস্তিদার ও মোহাম্মদ তোয়াহা সাম্যবাদী দল গঠন করলে কমরেড মিনু সাম্যবাদী দলের সাথে যুক্ত হন। এবং এরই ধারাবাহিকতায় ১৯৮৬ সালে কমিউনিস্ট লীগের সাথে ঐক্যবদ্ধ হন। ১৯৮৯ সালে কমিউনিস্ট লীগ ও ওয়ার্কার্স পার্টি (অমল সেন) ঐক্যবদ্ধ হলে গঠিত হয় ইউনাইটেড কমিউনিস্ট লীগ। এরপর ১৯৯২ সালে ইউনাইটেড কমিউনিস্ট লীগ, সাম্যবাদী দল ও ওয়ার্কার্স পার্টি (মেনন) ঐক্যবদ্ধ হয়ে বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টি গঠন হলে কমরেড মিনু ওয়ার্কার্স পার্টি নারায়ণগঞ্জ জেলা কমিটির সদস্য হিসাবে দায়িত্ব পালন করেন। এবং একই সময়ে তিনি ওয়ার্কার্স পার্টির শ্রমিক সংগঠন জাতীয় শ্রমিক ফেডারেশনের নারায়ণগঞ্জ জেলা কমিটির সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন।

এ শতাব্দীর গোড়ার দিকে বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির লেজুড়বৃত্তির সুবিধাবাদী নেতৃত্ব যখন মৌলবাদ বিরোধী সংগ্রামের কথা বলে পার্টিকে আওয়ামী লীগের লেজুড়ে পরিণত করলো, যখন বাম ফ্রন্ট ও ১১ দলকে ছত্রভঙ্গ করে আওয়ামী লীগের সাথে আন্দোলন, নির্বাচন ও সরকার গঠনের লক্ষ্যে তথাকথিত ২৩ দফার ভিত্তিতে প্রথমে ১৪ দলীয় জোট ও পরবর্তীতে স্বৈরতন্ত্রী এরশাদের জাতীয় পার্টি ও মৌলবাদী খেলাফত মজলিশসহ শাসকশ্রেণীর যাবতীয় জঞ্জালের সঙ্গে একাকার হয়ে গিয়ে ক্ষমতার ছিটেফোটা বখরা পাওয়ার মোহে মহাজোটে সামীল হয়ে নৌকায় উঠে বসার পরিকল্পনায় ব্যস্ত হয়ে উঠলো তখন অনিবার্যভাবেই পার্টি ও বামপন্থী আন্দোলনের এই অন্তর্ঘাতমূলক বিলোপবাদী প্রবণতা ও ধারার বিরুদ্ধে দাঁড়িয়ে পার্টি ও বিপ্লবী বামপন্থী আন্দোলন পুনর্গঠন ও বিকশিত করার কাজকে এগিয়ে নিতে বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টি গঠনের ঐতিহাসিক যৌক্তিকতা, তাৎপর্য ও গুরুত্ব পরিলক্ষিত হয়। ফলস্বরূপ ২০০৪ এর ১৪ জুন বিপ্লবী রাজনীতি ও বিপ্লবী সত্তা রক্ষায় কেন্দ্র থেকে শুরু করে সারাদেশেই পার্টি পুনর্গঠনের যাত্রা শুরু হয়। তারই ধারাবাহিকতায় বিপ্লবী ভাবমানস সম্পন্ন পার্টির নিবেদিত প্রাণ নেতা-কর্মীদের সমন্বয়ে নারায়ণগঞ্জেও গড়ে ঊঠে বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টি (পুনর্গঠন কমিটি) যা আজকের বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টি। নারায়ণগঞ্জে পার্টি গড়ে তোলার এ পর্যায়ের অন্যতম সিপাহশালার ছিলেন কমরেড মিনু।

কতিপয় বিপথগামী নেতৃত্বের কারণে নারায়ণগঞ্জ জেলা পার্টির চরম নিদান সৃষ্টি হলে ২০০৮ সালে কমরেড মিনু বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির নারায়ণগঞ্জ জেলা কমিটির সভাপতির দায়িত্বভার গ্রহন করেন। এবং ২০১৭ সাল পর্যন্ত সভাপতি হিসাবে রাজনীতিতে সক্রিয় ছিলেন। বয়সের কারণে শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে তিনি গত কয়েক বছর ধরে সাংগঠনিক কাজে অংশগ্রহণ করতে পারেননি।

সরল প্রাণ এই প্রচার বিমূখ বিপ্লবী জননেতা কমরেড মিনু খুব ভালো করেই বিশ্বাস করতেন, শ্রমিকশ্রেণীর আন্দোলনের অগ্রণী মতবাদ, মার্কসবাদী-লেনিনবাদী তত্ত্ব আত্মস্থ করতে না পারলে শ্রমিকশ্রেণীর পার্টি নিজ শ্রেণীর নেতৃত্ব করার ভূমিকা নিতে পারে না, সর্বহারা বিপ্লবের সংগঠক ও পরিচালকের ভূমিকা নিতে পারে না।

মার্কসবাদী- লেনিনবাদী তত্ত্বের শক্তি হল, ইহা পার্টিকে যে কোন বিশেষ পরিস্থিতিতে যথাযথ দৃষ্টিভঙ্গির সন্ধান দেয়; বর্তমান ঘটনাবলীর অন্তর্নিহিত স¤পর্ক বুঝিয়ে দেয়; ঘটনার গতি পূর্ব হতেই লক্ষ্য করা, এবং শুধু বর্তমানের ঘটনা কেমন ভাবে ও কোন দিকে বিকাশ পাচ্ছে তা নয়, ভবিষ্যতেও কেমন ভাবে ও কোন দিকে বিকাশ পাবে তা বুঝবার ক্ষমতা দেয়।

মার্কসবাদী-লেনিনবাদী তত্ত্ব যে পার্টি আত্মস্থ করেছে, কেবল সেই পার্টিই পারে আত্মবিশ্বাসের জোরে অগ্রসর হতে, পারে শ্রমিকশ্রেণীকে এগিয়ে নিতে। অপরপক্ষে, যে পার্টি মার্কসবাদী-লেনিনবাদী তত্ত্ব আয়ত্ত করে নাই, সে পার্টি পথ হাতড়ে চলতে বাধ্য হয়, নিজের কাজে ভরসা হারিয়ে ফেলে এবং শ্রমিকশ্রেণীকে এগিয়ে নিতে অসমর্থ হয়।

আর তাই তিনি তাঁর জীবনের শেষ দিন পর্যন্ত একটি বিপ্লবী ধারার মার্কসবাদী লেনিনবাদী পার্টি গড়ে তোলার প্রাণান্তকর চেষ্টা চালিয়ে গেছেন। বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির রক্ত লাল পতাকা নিয়ে শ্রমজীবী মেহনতী মানুষের মিছিলে নেতৃত্ব দিয়েছেন। নারায়ণগঞ্জের অত্যন্ত সম্ভ্রান্ত পরিবারের সন্তান হয়েও ব্যক্তিগত জীবন যাপন করেছেন সাধারণের চাইতেও সাধারণ মানুষের মতো। এই নির্লোভী সরল প্রাণ সাহসী মানুষটির প্রতি সশ্রদ্ধ সালাম।

আবু হাসান টিপু.
পলিট ব্যুরোর সদস্য
বাংলাদেশের বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টি
কেন্দ্রীয় কমিটি।





উপ সম্পাদকীয় এর আরও খবর

শান্তি চুক্তি পাহাড়ে বসবাসরত সকল জনগোষ্ঠীর অধিকার রক্ষায় সম্পূর্ণ ব্যর্থ শান্তি চুক্তি পাহাড়ে বসবাসরত সকল জনগোষ্ঠীর অধিকার রক্ষায় সম্পূর্ণ ব্যর্থ
পার্বত্য চুক্তির ২৬ বছরে পার্বত্য চট্টগ্রামের জনগণ কি-কি বৈষম্যের স্বীকার তা নিয়ে একটি পর্যালোচনা পার্বত্য চুক্তির ২৬ বছরে পার্বত্য চট্টগ্রামের জনগণ কি-কি বৈষম্যের স্বীকার তা নিয়ে একটি পর্যালোচনা
পার্বত্য অঞ্চলের ক্রীড়া উন্নয়নের নৈপথ্যের নায়ক নির্মল বড়ুয়া মিলন পার্বত্য অঞ্চলের ক্রীড়া উন্নয়নের নৈপথ্যের নায়ক নির্মল বড়ুয়া মিলন
সবকিছু কেড়ে নিয়েছে স্বৈরাচারী খুনি হাসিনার আওয়ামীলীগ সবকিছু কেড়ে নিয়েছে স্বৈরাচারী খুনি হাসিনার আওয়ামীলীগ
রাঙামাটিতে ঐক্যবদ্ধ বড়ুয়া সমাজ গড়ে তোলার সম্ভবনার পথ দেখা দিয়েছে রাঙামাটিতে ঐক্যবদ্ধ বড়ুয়া সমাজ গড়ে তোলার সম্ভবনার পথ দেখা দিয়েছে
আগামীতে  কারা দেশ চালাবে ? আগামীতে কারা দেশ চালাবে ?
মহান মে দিবস ও  শ্রমিকশ্রেণীর মুক্তির সংগ্রাম মহান মে দিবস ও শ্রমিকশ্রেণীর মুক্তির সংগ্রাম
সীমান্ত হত্যাকাণ্ড ও বাংলাদেশ - ভারত সম্পর্ক সীমান্ত হত্যাকাণ্ড ও বাংলাদেশ - ভারত সম্পর্ক
বিপন্ন সভ্যতায় বিপন্ন নারী বিপন্ন সভ্যতায় বিপন্ন নারী
গণতান্ত্রিক ও মানবিক সমঅধিকার  ছাড়া  নারীর মুক্তি নেই : বহ্নিশিখা জামালী গণতান্ত্রিক ও মানবিক সমঅধিকার ছাড়া নারীর মুক্তি নেই : বহ্নিশিখা জামালী

আর্কাইভ