শিরোনাম:
●   পার্বত্য চট্টগ্রাম বড়ুয়া সংগঠনের ১৩ সদস্য বিশিষ্ট রাঙামাটি জেলা কমিটি গঠন ●   গোপালগঞ্জে এনসিপির শান্তিপুর্ণ কর্মসূচীতে নিষিদ্ধ আ’লীগের হামলায় গনতন্ত্র মঞ্চের নিন্দা ●   নির্বাচনের আগে বিচারের উদ্যোগকে দেশবাসী দৃশ্যমান দেখতে চায় ●   যাদের অধিকাংশেরই জামানত হারানোর ভয় রয়েছে তারাই নির্বাচনকে বিলম্বিত করতে চায় ●   গোপালগঞ্জে এনসিপির কর্মসূচীতে আ’লীগের আক্রমণে বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টি রাঙামাটি জেলা কমটির নিন্দা ●   সরকারের এজেন্ডা ছোট করে এনে তত্বাবধায়ক সরকারের আদলেই বাকি কাজ সম্পন্ন করা দরকার ●   গোপালগঞ্জে এনসিপির কর্মসূচীতে আওয়ামী লীগের আক্রমণের নিন্দা ●   বড়ুয়া সংগঠনের নর্বগঠিত কমিটির নেতৃবৃন্দ রাঙামাটি জেলা প্রশাসক সাথে সৌজন্য স্বাক্ষাত করেছেন ●   পার্বত্য চট্টগ্রাম বড়ুয়া সংগঠনের ৮ দফা দাবিতে স্মারকলিপি ●   মিলন সভাপতি ও প্রকাশ সম্পাদক পার্বত্য চট্টগ্রাম বড়ুয়া সংগঠনের ১৭ সদস্যের কেন্দ্রীয় কমিটি গঠন
ঢাকা, শুক্রবার, ১৮ জুলাই ২০২৫, ৩ শ্রাবণ ১৪৩২

জনগণতন্ত্র-jonogonotontro/The Peoples Democracy
সোমবার ● ৮ জুন ২০২০
প্রথম পাতা » ছবিঘর » করোনা দুর্যোগ : নারীর ছুটি হল না
প্রথম পাতা » ছবিঘর » করোনা দুর্যোগ : নারীর ছুটি হল না
৭৩৯ বার পঠিত
সোমবার ● ৮ জুন ২০২০
Decrease Font Size Increase Font Size Email this Article Print Friendly Version

করোনা দুর্যোগ : নারীর ছুটি হল না

---বহ্নিশিখা জামালী :: করোনা দুর্যোগ মোকাবেলায় পৃথিবীর নানাদেশের মত বাংলাদেশেও যখন সাধারণ ছুটি আর লকডাউনের ঘোষণায় পেশাজীবী ও কর্মজীবী পুরুষেরা দলে দলে ফিরতে থাকলো, পারিবারিক পরিবেশে ছুটি কাটাতে শুরু করলো তখন নারীর গন্তব্য কোথায় ? অনেক পেশাজীবী, কর্মজীবী নারীরা তার নিজের ঘরটিতে ফিরতে শুরু করলেও তার আপন ঘরে থাকা হলো আর কই ? করোনার এক মহাদুর্যোগে লক্ষ লক্ষ মানুষ যখন ঘরকে নিরাপদ আশ্রয় করেছে, ঘরে থেকে এক অপ্রত্যাশিত ও অনাকাঙ্খিত ছুটি ভোগ করছে তখন এরকম একটি সাধারণ ছুটিতেও আমাদের অধিকাংশ নারীরা সে ছুটি ভোগ করতে পারলো না। আমাদের ঘরে-বাইরে কোটি কোটি নারীদের বড় অংশই এই ছুটি উদযাপনের ধরন কেমন তা বুঝতেই পারলো না। ‘করোনা’ মহামারিতে পুরুষরা যখন ঘরে ফিরছে, নারীরা তখন কোথায় ফিরছে ? নারী ফিরছে তখন সেই নিরানন্দ আর একঘেয়েমি জীবনের বাস্তবতায়। শোবার ঘর থেকে হেসেল, আবার সেই হেসেল থেকে শোবার ঘর। তাদের সীমানা যেন সেই চৌহদ্দির বেড়াজালের মধ্যেই আবদ্ধ।

করোনাকালের এই দুঃসময়ে ঘর গৃহস্থালী থেকে শুরু করে প্রায় সর্বক্ষেত্রেই পেশাজীবী, কর্মজীবী ও শ্রমজীবী নারীদের কাজের মাত্রা বহুগুণে বৃদ্ধি পেয়েছে। সবার ছুটি মিললেও এই সময়টিতে তাদের ছুটি মেলেনি। বরং পরিবারের পুরুষ সদস্যরা যখন ঘরবন্দী তখন নারীদের কাজ ও কাজের তাড়া আরও বেড়ে গেছে। ঘরের দৈনন্দিন রান্নাবান্না, সন্তান সন্ততি লালন-পালন, শ্বশুর-শ্বাশুড়ির সেবাযত্ন, অসুস্থের দেখভাল থেকে শুরু করে পরিবারের পুরুষ সদস্যদের নানা ধরনের বায়না মেটাতে অসংখ্য কাজে তাদের দিন চলে যায়। এই সময়কালে নারীদের শ্রমঘন্টা কমেনি বরং বেশীরভাগ ক্ষেত্রে আরো বুদ্ধি পেয়েছে। অধিকাংশ নাারীদের দৈনন্দিন জীবন আরও কষ্টকর ও দুর্বিসহ হয়ে উঠেছে। হাঁস-মুরগী পালন, গবাদি পশু পরিচর্যা, ধান মাড়াই, ধান শুকানো, তাঁতী নারীদের তাঁত বোনা, ছোট ছোট কুটির শিল্পের নিরন্তন কাজ, ছোট বড় গ্রামীণ নানা শিল্পে নারীদের কাজের কোন বিরাম নেই।

ঘরের অনেক পুরুষরা যখন করোনা কালে সময় কাটাচ্ছেন শুয়ে বসে, টিভি আর সিনেমাসহ নানা বিনোদনের মধ্য দিয়ে নারীদেরকে তখন ছুটতে হচ্ছে তিনবেলা খাদ্যের জোগান দেওয়া থেকে শুরু করে বহু ধরনের বিচিত্র কাজে। করোনাকালে পুরুষতান্ত্রিকতা যেন নতুন মাত্রা ও নতুন চেহারা নিয়ে আবির্ভূত হয়েছে। সকাল থেকে রাত অবধি পুরুষতান্ত্রিকতা নানারূপেই প্রকাশিত হচ্ছে।
এটা সত্য যে পুরুষদের একটা উল্লেখযোগ্য অংশ নারীদের প্রতি গভীর সংবেদনশীলতা, দায়িত্ব ও মমত্ববোধের পরিচয় দিচ্ছেন। এই সময়কালে ঘর গৃহস্থালীর অনেক কাজেই পুরুষ সদস্যরা অংশ নিচ্ছেন, সহযোগিতা করছেন- এটা অসত্য নয়। রান্না বান্নাসহ শিশুর দায়িত্ব পালনেও অনেক পুরুষেরা এগিয়ে আসছেন সন্দেহ নেই। নারীদের ঘর গৃহস্থালীর কাজ সম্পর্কে শতাব্দীর পর শতাব্দী ধরে পুরুষদের মধ্যে প্রচলিত যে ধারণা ‘সারাদিন ঘরে কি বা এমন কাজ’ এই ব্যাপারে করোনাকাল পুরুষকুলকে নারীদের সারাদিনের ব্যস্ততা সম্পর্কে খানিকটা উপলব্ধির সুযোগ করে দিয়েছে। নারীদের যেসকল কাজকে পুরুষেরা পুরুষতান্ত্রিক চিন্তা ও দৃষ্টিভঙ্গির কারণে ‘কাজ’ বলেই মনে করতো না এখন হয়ত পুরুষদের ক্ষেত্রে এই ধারনা পরিবর্তনের একটা সুযোগ তৈরী হয়েছে।

তবে তথ্য বলছে, করোনাকালে পুরুষতান্ত্রিকতা কমেনি বরং নতুনভাবে তার ব্যাপ্তি ঘটেছে। ক্রমেই তার প্রকাশ ঘটে চলেছে।’ মানুষের জন্যে ফাউন্ডশন’সহ কয়েকটি সংস্থার ২৭টি জেলায় পরিচালিত এক যৌথ জরীপে দেখা যাচ্ছে ‘লকডাউনে’ এপ্রিল মাসে পারিবারিক সহিংসতার শিকার হয়েছে ৪,২৪৯জন নারী । এর মধ্যে প্রথমবারের মত নির্যাতনের শিকার হয়েছে ১,৬৭২ জন। এদের মধ্যে ৮৪৮ জন শারীরিক নির্যাতন, ২০০ জন মানসিক নির্যাতন আর অর্থনৈতিক নির্যাতনের শিকার হয়েছে ১৩০৮ জন নারী। আর ধর্ষণ ও যৌন হয়রানির ঘটনা ঘটেছে ৪২টা। এই সময়কালে গৃহনির্যাতন বেড়েছে ২০ শতাংশ। এসব তথ্য সারাদেশে সংঘটিত নানা ধরনের সহিংসতার খন্ডাংশ মাত্র। আর এসব তথ্য থেকে করোনাদুর্যোগে নারীর উপর সংঘটিত নানা ধরনের সহিংসতা ও অপরাপর ক্রমবর্ধমান প্রবণতা সম্পর্কে একটা ধারণা করা যায়। উচ্চবিত্ত, মধ্যবিত্ত, পেশাজীবী পরিবারও এসব সহিংসতার বাইরে থাকছে না। তবে অর্থনৈতিক টানাপোড়নে নিম্নবিত্ত ও শ্রমজীবী মেহনতি পরিবারসমূহের মধ্যে সংগত কারণে সহিংসতার মাত্রা তুলনামূলক বেশী। সাধারণ ছুটি বা লকডাউনে যেসব কর্মজীবী শ্রমজীবী নারীরা ঘরে ফিরেছিল বেশীদিন তারা ঘরে থাকতে পারেনি। গার্মেন্ট শ্রমিকসহ এই কর্মজীবী নারীদের অধিকাংশকেই মাত্র ক’দিনের মধ্যেই জীবনের ঝুঁকি নিয়ে নিরাপত্তাহীন পরিবেশে আবার কর্মস্থলে যোগ দিতে হয়েছে। বাসায় বসে অবকাশযাপনের বিলাসিতা করার কোন সুযোগ তাদের ছিল না। দেখা যাচ্ছে জীবনের চেয়ে জীবিকার তাগিদটাই বেশী। এই তাগিদ বোধের কারণে যে অকল্পনীয় কষ্ট, পরিশ্রম ও মনোবেদনা নিয়ে তাদের কর্মস্থল আর বাসায় আসা যাওয়া করতে হয়েছে। শরীর ও হৃদযন্ত্রের এই রক্তক্ষরণ মাপার মানদন্ড বোধ করি আমরা এখনো তৈরী করতে পারিনি। ফলে নারীর কষ্ট ও বেদনা তার নিজের ভেতরেই গুমরে গুমরে মরছে। এই ঘোর করোনাকালেও নারীর নিজের লড়াইটা নারীকে একাই লড়তে হচ্ছে। কর্মস্থলে তার যেমন কোন বিশ্রামের অবকাশ নেই, তেমনি নিজের ঘর বলে যাকে সে জানে, সেখানেও তার বিশ্রামের বিশেষ সুযোগ মেলেনি, মিলছেও না।

ইতিহাসের গুরুত্বপূর্ণ স্বাক্ষ্য হচ্ছে শেষ পর্যন্ত যুদ্ধ, মহামারি ও প্রাকৃতিক দুর্যোগে সবচেয়ে দুর্গত ও নিপীড়িত হয় নারী ও শিশুরা। ২০২০ এর করোনাকালের অভিজ্ঞতাও একই রকম। পৃথিবীর অনেক দেশের মত বাংলাদেশেও করোনা মহামারির শেষ চাপ এসেে পড়েছে নারীদের উপর। বৈষম্যভরা শ্রেণীবিভক্ত বাংলাদেশে করোনা মহামারিতে ঘরে বাইরে নারীদের অসহায়ত্ব আর নিগ্রহের যেন শেষ নেই। এই মহামারির দুর্যোগেও পুরুষতান্ত্রিকতার দৃশ্য -অদৃশ্য নানা ধরনের শেকল ঘরে বাইরে নারীকে বেঁধে রেখেছে। করোনাকালেও পুরুষতান্ত্রিকতার ক্ষেত্রে ‘লকডাউন’ হয়নি। অধিকাংশ নারীরাও অবচেতনভাবে এই পুরুষতান্ত্রিকতাকে স্বাভাবিকভাবে মেনে নেয়। দায়িত্ববোধ, আত্মচেতনা, মর্যাদা, সম্মান ও গৌরব নিয়ে নারীকে করোনা দুর্যোগ যেমন মোকাবেলা করতে মোকাবেলা করতে হবে তেমন পুরুষতান্ত্রিকতার জানা-অজানা শেকল ভাঙ্গার কাজটাও নারীকে শুরু করতে হবে। তা না হলে নারীর মুক্তি নেই। মুক্তি নেই সমাজেরও।

লেখক: বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির রাজনৈতিক পরিষদের সদস্য, সভাপতি, শ্রমজীবী নারী মৈত্রী





ছবিঘর এর আরও খবর

পার্বত্য চট্টগ্রাম বড়ুয়া সংগঠনের ১৩ সদস্য বিশিষ্ট রাঙামাটি জেলা কমিটি গঠন পার্বত্য চট্টগ্রাম বড়ুয়া সংগঠনের ১৩ সদস্য বিশিষ্ট রাঙামাটি জেলা কমিটি গঠন
গোপালগঞ্জে এনসিপির কর্মসূচীতে আ’লীগের আক্রমণে বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টি রাঙামাটি জেলা কমটির নিন্দা গোপালগঞ্জে এনসিপির কর্মসূচীতে আ’লীগের আক্রমণে বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টি রাঙামাটি জেলা কমটির নিন্দা
সরকারের এজেন্ডা ছোট  করে এনে তত্বাবধায়ক সরকারের আদলেই বাকি কাজ সম্পন্ন করা দরকার সরকারের এজেন্ডা ছোট করে এনে তত্বাবধায়ক সরকারের আদলেই বাকি কাজ সম্পন্ন করা দরকার
গোপালগঞ্জে এনসিপির কর্মসূচীতে আওয়ামী লীগের আক্রমণের নিন্দা গোপালগঞ্জে এনসিপির কর্মসূচীতে আওয়ামী লীগের আক্রমণের নিন্দা
বড়ুয়া সংগঠনের নর্বগঠিত কমিটির নেতৃবৃন্দ রাঙামাটি জেলা প্রশাসক সাথে সৌজন্য স্বাক্ষাত করেছেন বড়ুয়া সংগঠনের নর্বগঠিত কমিটির নেতৃবৃন্দ রাঙামাটি জেলা প্রশাসক সাথে সৌজন্য স্বাক্ষাত করেছেন
মিলন সভাপতি ও প্রকাশ সম্পাদক পার্বত্য চট্টগ্রাম বড়ুয়া সংগঠনের ১৭ সদস্যের কেন্দ্রীয় কমিটি গঠন মিলন সভাপতি ও প্রকাশ সম্পাদক পার্বত্য চট্টগ্রাম বড়ুয়া সংগঠনের ১৭ সদস্যের কেন্দ্রীয় কমিটি গঠন
রাষ্ট্রক্ষমতা দেশ পরিচালনার ম্যান্ডেট, স্বেচ্ছাচারীতা চালাবার লাইসেন্স নয় রাষ্ট্রক্ষমতা দেশ পরিচালনার ম্যান্ডেট, স্বেচ্ছাচারীতা চালাবার লাইসেন্স নয়
সরকারের অকার্যকারীতায় সামাজিক নৈরাজ্য দ্রুত রাজনৈতিক নৈরাজ্যের পথে বাঁক নিচ্ছে সরকারের অকার্যকারীতায় সামাজিক নৈরাজ্য দ্রুত রাজনৈতিক নৈরাজ্যের পথে বাঁক নিচ্ছে
গণঅভ্যুত্থানের অর্জন ধরে রাখতে সকল বৈষম্যের বিলোপ ঘটাতে হবে গণঅভ্যুত্থানের অর্জন ধরে রাখতে সকল বৈষম্যের বিলোপ ঘটাতে হবে
পার্বত্য চট্টগ্রাম বড়ুয়া জনগোষ্ঠীর জাতীয় প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন পার্বত্য চট্টগ্রাম বড়ুয়া জনগোষ্ঠীর জাতীয় প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন

আর্কাইভ