

রবিবার ● ১৩ জুন ২০২১
প্রথম পাতা » অর্থবাণিজ্য » কৃষক ও খেতমজুর সংগ্রাম পরিষদের সভায় বাজেট প্রত্যাখান
কৃষক ও খেতমজুর সংগ্রাম পরিষদের সভায় বাজেট প্রত্যাখান
ঢাকা :: আজ বিকেল ৪ টায় কৃষক- খেতমজুর সংগ্রাম পরিষদের এক সাধারণ সভায় কৃষক ও খেতমজুর নেতৃবৃন্দ গত ৩রা জুন ২০২১-২২ অর্থবছরের প্রস্তাবিত জাতীয় বাজেটের তীব্র সমালোচনা করেন এবং বলেন এই বাজেটে প্রতি বছরের ন্যায় এবারও কৃষিখাতকে উপেক্ষা করা হয়েছে। বাজেটে কেবলমাত্র কর্পোরেট-ধনীক শ্রেণীর ব্যবসায়ীদের স্বার্থ রক্ষা করা হয়েছে। দেশের মানুষ মনে করেছিল যে, করোনা দুর্যোগজনীত কারণে পরিস্থিতি বিবেচনায় সরকার দেশের সাধারণ মানুষের কথা বিবেচনায় রেখে স্বাস্থ্য খাত, কৃষি খাত ও গ্রামীণ সামাজিক নিরাপত্তাখাতে বরাদ্দ বৃদ্ধি করা হবে। সরকার এবং অর্থমন্ত্রী বলেছিলেন যে, এবারর বাজেট হবে ‘জীবন ও জীবিকার’ বাজেট। কিন্তু সরকার ও মন্ত্রী যে কথা রক্ষা করেননি দেশের মানুষের সাথে দেওয়া প্রতিশ্রুতি ভঙ্গ করে এক ধরনের প্রতারণা করেছেন।
নেতৃবৃন্দ বলেন, করোনার কারণে চলমান লকডাউনে কৃষক যেমন তার উৎপাদিত কৃষি ফসলের ন্যায্য মূল্য থেকে বঞ্চিত হচ্ছে, উৎপাদিত পণ্য বাজারজাত করতে পারছে না। অপরদিকে গ্রামীণ শ্রমজীবী খেতমজুররা কর্মহীন হয়ে বেকারত্ব জীবনযাপন করছে। সামাজিক নিরাপত্তার বরাদ্দ যেটুকু আছে তাহাও দলীয় ও দুর্নীতির কারণে তাদের হাত অবধি পৌছাচ্ছে না।
রাষ্ট্রায়াত্ত্ব পাটকল, চিনিকল, সুতা কলসহ গুরুত্বপূর্ণ জাতীয় শিল্প ও আজ সরকারের ভুলনীতি, দুর্নীতির কারণে ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে। হাজার হাজার মিল শ্রমিক চাকুরী হারিয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছে। ক্ষুদ্র, মাঝারি কৃষক তাদের কৃষিঋণ ও মহাজনী, এনজি ঋণের চাপে দিশেহারা। বাজেটে এইসকল শিল্প রক্ষায় বা পুনরুজ্জীবনের কোন দিকনির্দেশনা নেই। দরিদ্র ও হতদরিদ্র মানুষ সরকারের নগদ সাহায্য ও প্রণোদনার বাইরে। প্রায় সাড়ে ছয় কোটি মানুষ চরম দারিদ্রসীমার নীচে বসবাস করছে। আরো লক্ষ লক্ষ মানুষ এই বছরের মধ্যেই দারিদ্রসীমার নীচে যাবে। তাদের জন্যও সরকার বাজেটে তেমন কোন বরাদ্দ রাখেনি। গ্রামীণ নিম্নবিত্ত, মধ্যবিত্তদের জন্য রেশনিংয়ের কোন ব্যবস্থা নেই।
নেতৃবৃন্দ বলেন, এই ধনীক শ্রেণীর বাজেটে আগামীতে ধনীরা আরো অধিক ধনী হবে, আর দেশের বিপুল সংখ্যক মানুষ আরো নিঃস্ব হবে। তাই এই বাজেট কোনভাবই জনমানুষের বাজেট হতে পারে না। দেশের সাধারণ মানুষের মত কৃষক ও খেতমজুররাও এই বাজেট প্রত্যাখান করছে।
নেতৃবৃন্দ আরো বলেন, অনতিবিলম্বে এই বাজেট স্থগিত করে কৃষি ও স্বাস্থ্যখাতসহ গ্রামীণ সামাজিক নিরাপত্তা খাতেও বরাদ্দ বৃদ্ধি করে নতুন করে সংযুক্তি বাজেট প্রণয়নের জন্য সরকারকে পদক্ষেপ গ্রহণের আহ্বান জানান এবং এই দাবীতে আগামী ২৩ জুন সকাল ১১টায় জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে বিক্ষোভ সমাবেশ অনুষ্ঠিত করার ঘোষণা প্রদান করেন।
আজ বিকাল ৪ টায় ২৮/৮-এ, সেগুনবাগিচায় বাংলাদেশ খেতমজুর ইউনিয়নের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে খেতমজুর ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক, কৃষক- খেতমজুর সংগ্রাম পরিষদের সমন্বয়ক আকবর খানের সভাপতিত্বে এই সভা অনুষ্ঠিত হয়।
সভায় উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ খেতমজুর ইউনিয়নের সভাপতি, বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক, সমাজতান্ত্রিক কৃষক ও খেতমজুর ফ্রন্টের সাধারণ সম্পাদক বজলুর রশিদ ফিরোজ, বাংলাদেশ কৃষক খেতমজুর সমিতির সভাপতি অধ্যাপক আব্দুস সাত্তার, কেন্দ্রীয় নেতা মোশারফ হোসেন নান্নু, কৃষক খেতমজুর সংগঠনের কেন্দ্রীয় নেতা মানস নন্দী, বাংলাদেশ কৃষক সমিতির কেন্দ্রীয় নেতা সুকান্ত শফি কমল, কৃষক ও খেতমজুর ফোরাম এর কেন্দ্রীয় নেতা শহিদুল ইসলাম সবুজ প্রমুখ।