

শনিবার ● ১ মে ২০২১
প্রথম পাতা » ছবিঘর » মে দিবসের রক্তবীজ থেকে শ্রমিকশ্রেণী আবার জেগে উঠবে
মে দিবসের রক্তবীজ থেকে শ্রমিকশ্রেণী আবার জেগে উঠবে
এই বছরও করোনা মহামারীর মধ্যে সারা দুনিয়ার শ্রমজীবী মেহনতি মানুষ শ্রমিকশ্রেণীর আন্তর্জাতিক সংহতি দিবস হিসাবে মহান মে দিবস পালন করছে।১৮৮৬ সালে আমেরিকার শিকাগো শহরের হে মার্কেটে শ্রমিকশ্রেণী শ্রমঘন্টা কমানোর দাবিসহ তাদের বাঁচার দাবিতে যে শ্রমিক বিদ্রোহ সংঘটিত করেছিল মালিক শ্রেণী তা রক্তে ভাসিয়ে দেয়।কিন্তু পরবর্তীতে শ্রমিকশ্রেণীর এই রক্তবীজ থেকে আমেরিকা - ইউরোপসহ সারা দুনিয়ায় শ্রমিক আন্দোলনের ঢেউ ছড়িয়ে পড়ে। শ্রমঘন্টা নির্ধারনসহ একে একে শ্রমিকদের ট্রেড ইউনিয়ন অধিকার ও গণতান্ত্রিক অধিকারের কিছু কিছু স্বীকৃতি মিলতে থাকে। পৃথিবীর দেশে দেশে শ্রমিকশ্রেণী রাজনৈতিক ও সাংগঠনিক ভাবে সংগঠিত হতে থাকে।
বস্তুতঃ মে দিবসের এই পথ ধরে পৃথিবীর দেশে দেশে শ্রমিকশ্রেণীর নেতৃত্বে রাষ্ট্র বিপ্লব সংগঠিত হয়।শ্রমিকশ্রেণী প্রমাণ করেছে সুযোগ, অধিকার ও ক্ষমতা পেলে তারা কতখানি সৃজনশীল হয়ে উঠতে পারে। শ্রমিকশ্রেণী সন্দেহাতীত ভাবে প্রমাণ করেছে যে, সমাজে শ্রেণীশোষণ ও শ্রেণী বৈষম্যের বিলোপ ঘটিয়ে বুর্জোয়া শ্রেণী পাল্টা শ্রেণী হিসাবে বিপ্লবী রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্ব নিয়ে তারা আরও সভ্য ও মানবিক সমাজব্যবস্থা গড়ে তুলতে পারে।নিজের মুক্তির পাশাপাশি নারী ও পিছিয়ে পড়া জনগণসহ নিপীড়িত সকলেরই মুক্তি নিশ্চিত করতে পারে।
শ্রমিকশ্রেণীর এই চলার পথ কখনই নিস্কন্টক ছিল না।শ্রমিকশ্রেণীকে অনেক চড়াই উতরায় পার হয়ে বাংলাদেশসহ পৃথিবীব্যাপী তার অধিকার ও মুক্তি অর্জনের সংগ্রাম এগিয়ে নিতে হচ্ছে।করোনার মত মহামারীসমূহ বারে বারে প্রমাণ করছে যে,বিদ্যমান মুনাফাসর্বস্ব উন্নয়ন ধারা কোনভাবেই শ্রমজীবী মানুষসহ জনগণের জীবন জীবিকাকে নিশ্চিত করতে পারে না।
বাংলাদেশে এই করোনা মহামারীর মধ্যেও শ্রমিকশ্রেণী জীবনবাজী রেখে উৎপাদনের চাকাকে অব্যাহত রেখেছে। অথচ তাদের পেটেই ভাত নেই, নেই ন্যায্য মজুরি এবং অধিকার ও মানবিক মর্যাদা।এই পরিস্থিতি র অবসান ঘটাতে হলে রাজনৈতিক ভাবে শ্রমিকশ্রেণীর সংগঠিত হওয়া এবং শ্রমজীবী - মেহনতি মানুষের সাম্যভিত্তিক মানবিক রাষ্ট্র ও সমাজ প্রতিষ্ঠার কোন বিকল্প নেই।এবারকার মে দিবসে এটাই হোক আমাদের শপথ।
বহ্নিশিখা জামালী,
সম্পাদক
জনগণতন্ত্র।